স্টকহোম সিনড্রোম

স্টকহোম সিনড্রোম, এমন একটি মানসিক অবস্থা যেখানে একজন অপরাধীর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করা হয় এবং এই সহানুভূতি প্রকাশ করে সেই ব্যক্তি যিনি নিজেই ভুক্তভোগী। এখানে এক অবিশ্বাস্য মানসিক অবস্থার সৃষ্টি হয় যেখানে ভুক্তভোগী ব্যক্তি আবেগের বশীভূত হয়ে চিন্তা করে, অপরাধী কোন অন্যায় করে নি। এই অপরাধকে স্বাভাবিক  কোন ঘটনার মত করে দেখার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় ওই ভুক্তভোগীর মাঝে। অপরাধীর প্রতি দুর্বলতা সত্যিকার অর্থেই অদ্ভুত এক  ধরনের মানসিক পরিস্থিতির তৈরি করে।

তাহলে এই অদ্ভুত মানসিক পরিস্থিতির নাম কেন স্টকহোম সিনড্রোম ?

এর পিছনে একটি পটভূমি আছে যা সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের একটি ব্যাংক ডাকাতিকে কেন্দ্র করে।

১৯৭৩ সালের ২৩ই অগাস্টে স্টকহোমের সুপরিচিত তৎকালীন kreditbanken যা বর্তমান নরডিয়া ব্যাংকে একজন অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত হামলা করে। ব্যাংকের ভোল্টে ওই অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত ৬ দিন যাবত আটকে রাখে চারজন কর্মচারীকে  যার মধ্যে তিনজন ছিলো মহিলা এবং একজন পুরুষ। এই ৬ দিনে এক ধরনের অস্বাভাবিক সম্পর্কের সৃষ্টি হয় তাদের মাঝে। প্রধানমন্ত্রীর সাথে টেলিফোন কলে কথা বলার সময় একজন মহিলা বন্দী স্বীকার করেন যে তিনি অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তকে বিশ্বাস করেন, তবে তিনি শঙ্কিত তার জীবন নিয়ে। সবচাইতে অবাক করা বিষয় হচ্ছে, যখন বন্দিরা মুক্তি পেল তারা পুলিশের কাছে সাক্ষী দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। এমনকি দুর্বৃত্তকে অপরাধী হিসেবে মানতে নারাজ ছিলো তারা। শুধু তাই নয় দুর্বৃত্তের জন্য অর্থ সংগ্রহ করলো যাতে সে আর্থিক সাহায্য পায়।

তবে ইতিহাসে এই ধরনের ঘটনা আরও কয়েকবার ঘটেছে যা স্টকহোম সিনড্রোমের কারনেই হয় বলে বলা হয়ে থাকে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply