ইরানের যে জাহাজটিকে সামরিক ঘাঁটি মনে করা হত তার উপর হামলা করা হয়েছে
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন স্বীকার করেছে যে ইরানের একটি মালবাহী জাহাজ
যেটিকে রেভলুশনারি রক্ষীদের ঘাঁটি বলে মনে করা হত এবং ইয়েমেনের লোহিত সাগরে কয়েক বছর ধরে নোঙর করে রাখা হয়েছিল সেটির উপর হামলা করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় টিভি বিদেশী গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে, মঙ্গলবার এমভি সাভিজের সাথে জড়িত ঘটনার বিষয়ে প্রথম ইরানি মন্তব্য দিয়েছে এবং সন্দেহ করা হচ্ছে এই হামলা ইসরায়েলের দ্বারা পরিচালিত করা হয়েছে।
হামলাটি ঘটলো ঠিক যখন ইরান ও বিশ্বশক্তিরা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুনরায় যোগদানের বিষয়টি আলোচনার বসেছে।
এই অঞ্চলে জাহাজটির উপস্থিতির বারবার সমালোচনা করেছে সৌদি আরব। পশ্চিম এবং জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছে যে ইরান ইয়েমেনের হাউথি বিদ্রোহীদের অস্ত্র ও সহায়তা দিয়েছে। ইরান হাউথিদের সশস্ত্র করার বিষয়টি অস্বীকার করেছে যদিও বিদ্রোহীদের অস্ত্রের উপকরন গুলোর মধ্যে তেহরানের যোগসূত্র পাওয়া গেছে।
ইরান পূর্বে সাভিজকে লোহিত সাগরে “জলদস্যুতা দমন” প্রচেষ্টায় সহায়তাকারী হিসেবে বর্ণনা করে আসছে।
রাষ্ট্রীয় টিভি বিবৃতিতে, একজন অ্যাঙ্কর নিউইয়র্ক টাইমসের একটি পোস্টের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন অফিশিয়াল সংবাদপত্রটিকে বলেছেন যে, ইসরায়েল মঙ্গলবার সকালে তাদের জাহাজে হামলা চালানোর কথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছিল।
ইসরায়েলি অফিশিয়ালরা এ ঘটনা সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতী জানিয়েছে।
সাভিজ ২০১৫ অবধি বিশ্ব শক্তিধর দেশগুলোর সাথে ইরানের পারমাণবিক চুক্তি হবার আগ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার অধীনে ছিল। পরে তেহরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সীমিত করার বিনিময়ে অর্থনৈতিক সাহায্য পাবে এই চুক্তির আওয়তায় নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনার সময় এই অঞ্চলের জাহাজগুলোতে একের পর এক রহস্যজনক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে যার কয়েকটির জন্য মার্কিন নৌবাহিনী ইরানকে দায়ী করেছে। সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্থ জাহাজগুলির মধ্যে একটি ছিল ইসরায়েলি মালিকানাধীন গাড়ি বহনকারী যে হামলার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজমিন নেতানিয়াহু ইরানকে দায়ী করেন। আরেকটি ছিল ভূমধ্যসাগরে একটি ইরানি কার্গো জাহাজ।
ইরান ও ইসরাইল সাম্প্রতিক পর্যায়াক্রমিক হামলাগুলোর জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছে, জুলাইয়ের এক রহস্যময় বিস্ফোরণ সহ যা তার নাটানজ পারমাণবিক স্থাপনার একটি উন্নত সেন্ট্রিফিউজ সংবলিত স্থাপনা ধ্বংস করে। আরেকটি হ’ল নভেম্বরের শীর্ষ ইরানী বিজ্ঞানী হত্যাকাণ্ড, যিনি দুই দশক আগে দেশটির সামরিক পরমাণু কর্মসূচি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।