শারীরিক ব্যথার জন্য যথেচ্ছা ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন
ব্যথার ওষুধ আমাদের দারুণ স্বস্তি, আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় নিত্যদিনের সঙ্গী। সব সমস্যার সমাধান।
রাতে ভাল করে ঘুম হয়নি, মাথা টিপটিপ করছে কিংবা সিঁড়ি ভাঙ্গে নামতে হাঁটুতে ব্যথা বোধ হচ্ছে। কয়েকটা ব্যথার বড়ি গিলে ফেলুন আর কাজে ফিরে যান।
কাজকর্মের চাপেই হোক কিংবা ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আলসেমি অথবা নেহাতই গুরুত্ব না দেওয়ার মানসিকতার জন্য আমরা অনেকেই এই সব পেনকিলার বা ব্যতা কমানোর ওষুধের ইচ্ছেমত ব্যবহার করে থাকি।
ব্যাগে মজুত রাখি বিভিন্ন রকমের ব্যাথার ওষুধের পাতা, যেন প্রয়োজনে কাজে লাগাতে পারি। হ্যাঁ, এ কথা ঠিকই, সামান্য মাথা ব্যথা বা পেট ব্যথাতে কেই বা ডাক্তার দেখায়?
আর সব সময় কি কথায় কথায় ডাক্তারের কাছে যাওয়া সম্ভব? কিন্তু যখন তখন ইচ্ছেমত ব্যথার ওষুধের ব্যবহার আপনার অজান্তে, নিঃশব্দে শরীরের ক্ষতি করে ফেলে। কিছু কিছু ব্যথার ওষুধের প্রতিক্রিয়া আরও অনেক মারাত্মক।
তার থেকে ব্যথার কারণগুলো যদি সময় থাকতেই খুজে বের করে লাইফস্টাইলে কিছুটা পরিবর্তন এনে ব্যথা নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়, তবে আপনি অনেক ধরনের ঝামেলা থেকে বেচে থাকতে পারবেন। এর জন্য প্রয়োজন কিছুটা ধৈর্য আর আত্ম নিয়ন্ত্রণ।
ব্যথা দূর করতে করণীয় –
- চিকিৎসকের পরামর্শ মত ওষুধ সেবন করুন।
- নিয়মিত হাটাচলা এবং ব্যয়াম করুন।
- ব্যথা বেশি থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যয়াম করবেন না। আগে ব্যথা সারিয়ে নেবেন, তারপর এক্সপার্টের তত্ত্বাবধানে এক্সারসাইজ করুন, নিজের মন গড়া বা টিভি দেখে শেখা ব্যয়াম করা থেকে বিরত থাকুন।
- আপনার কাজের জায়গায় বসার চেয়ার যথাযথ কি না খেয়াল রাখুন। আপনার মাথা ও শিরদাঁড়া যেন সমান্তরাল থাকে।
- ভারি জিনিস হাঁটু ভেঙ্গে তুলুন, কোমরে চাপ দেবেন না।
- আড়াই ইঞ্চি পর্যন্ত ব্লক হিল পরতে পারেন, তার বেশি নয়।
- নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়া-দাওয়া করুন।
- বেশি তেলমসলাযুক্ত খাবার খাবেন না। হালকা সহজপাচ্য খাবার খান।
- খুব গরম খাবার খাবেন না।
- অনেকক্ষণ খালি পেট রাখবেন না। ৪ ঘন্টা পর পর খান।
- রাতে খাওয়ার পর কফি বা কোল্ড ড্রিংক খাবেন না।
- ধূমপান বা মদ্যপান করবেন না।
- স্ট্রেস বা টেনশন কমানোর চেষ্টা করুন।
- বিছানার গদি ঠিক রাখুন। শিরদাঁড়া যেন যথাযথ সাপোর্ট পায়।
- ভাল করে ঘুমান।
কখন ডাক্তার দেখাবেন –
- ব্যথা বেশি হলে।
- ব্যথার সঙ্গে জ্বর, দুর্বলতা ও ওজন কমা।
- ব্যথায় সারারাত ঘুমাতে না পারলে।
- ক্রমশ সারা গায়ে ব্যথা ছড়িয়ে পড়লে।
- এক সপ্তাহে ব্যথা না কমলে।
- ব্যথার কারণ নির্দিষ্ট করতে না পারলে।
- ব্যথার সঙ্গে জ্ঞান হারালে।
ব্যথার ওষুধ সেবনের ঝুকি যখন বেশী থাকে –
- বয়স ৬০ এর বেশি ।
- পেপটিক আলসার থাকলে।
- আগে ব্যথার ওষুধ খেয়ে কষ্ট পেয়ে থাকলে।
- একসাথে একাধিক ওষুধের সেবন করে থাকলে।
- হার্ট, লিভার বা কিডনির অসুখ থাকলে।
- অ্যালকোহলের সঙ্গে খেলে।
তথ্য উৎস- ইন্টারনেট