বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়গুলি

বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়গুলি

বাংলাদেশে প্রতিবছর অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের পাঠদানের যাত্রা শুরু করছে। শিক্ষাসেবা গ্রহণের চাহিদা আর জাতীয় উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য রেখে গড়ে উঠছে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুনাম এবং বাণিজ্যিক দিক দিয়ে সফলতা পাচ্ছে আবার কেউ স্বল্প অর্থায়ন আর দুর্বল অবকাঠামোর কারনে ঝরে পরছে প্রতিযোগিতা থেকে। তবে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে এমন কিছু বিদ্যালয় যা বাংলার শিক্ষা জগতের ঐতিহ্য ও ভিত্তি বলা যেতে পারে। আজকের আলোচনা হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন বিদ্যালয়গুলি নিয়ে।

রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল

অনেকেই রাজশাহীকে শিক্ষা নগরী হিসেবে দাবি করেন। তবে এটি কোন নিছক কোন দাবি নয়। রাজশাহীতেই বাংলার প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক স্কুল প্রতিষ্ঠা পায় যার নাম রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল।

১৮২৮ সালে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক এর স্বদিচ্ছায় প্রতিষ্ঠা পায় বাউলিয়া ইংলিশ স্কুল নামের একটি বিদ্যালয়। একটি অবৈতনিক প্রাইভেট স্কুল হিসেবে যাত্রা শুরু করে বাউলিয়া ইংলিশ স্কুল। পরবর্তীতে ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে এই স্কুলটির অধীনে আরও দুটি মহাবিদ্যালয়ের শ্রেণী সংযুক্ত করা হয়।

খুব সম্ভবত তখনই বাউলিয়া হাইস্কুলের নাম পরিবর্তন করে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল রাখা হয়। তৎকালীন সময়েও স্কুলটির ছিলো উল্লেখযোগ্য সাফল্য যেখানে ১৮৭৫ সালে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ৩৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করে ১৯ জন। প্রথম ও অতি প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বর্তমানেও ঐতিহ্যের সাথে টিকে আছে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ।

এই স্কুলের উল্লেখযোগ্য এলামনাইদের মধ্যে আছেন ভারতীয় ইতিহাসবিদ এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বন্ধু অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়, বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী নাজিব তারেক; কবি, গীতিকার এবং সুরকার রজনীকান্ত সেন; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের প্রতিষ্ঠাতা পূর্ব বাংলার নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ; চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক।

বরিশাল জিলা স্কুল

বাংলার বাঘ শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক যেই বিদ্যালয়টির ছাত্র ছিলেন সেই বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলার কোন মানে নেই। বরিশাল জিলা স্কুল বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেটি এন. ডাব্লিউ. গ্যারেট নামের একজন ইংরেজ ১৮২৯ সালের ২৩ ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

সেই সময় স্কুলটি মাত্র ৮ জন ছাত্র নিয়ে তাদের যাত্রা শুরু করেছিলো। তখন স্কুলটির নাম ছিলো বরিশাল ইংলিশ স্কুল। প্রথম প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত হয়েছিলেন জন স্মিথ

বরিশাল জিলা স্কুলের নাম কয়েক বার পরিবর্তন হয়েছিলো। ১৮৫৩ এর দিকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় আসার পর নাম দেয়া হয়েছিলো বরিশাল জিলা স্কুল। কিন্তু যখন ১৮৯১ এ বেসরকারি হয়ে যায়, তখন স্কুলটি আবার তার অতীত নাম বরিশাল ইংলিশ স্কুলে ফিরে যায়। কিন্তু ১৯০৬ এ যখন সরকারি ব্যবস্থাপনায় আসে, তখন বরিশাল ইংলিশ স্কুল পরিবর্তিত হয়ে বরিশাল জিলা স্কুল হয়।

বর্তমানে বরিশাল জিলা স্কুল সকাল এবং বিকাল শিফটে পরিচালিত হয়। ৫৪ জন শিক্ষক এবং প্রায় ২৩০০ জন ছাত্র নিয়ে স্কুলের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

বাংলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়গুলিAttribution: “File:Barisal Zilla School Campus.jpg” by Lonely Explorer is licensed under CC BY-SA 4.0

শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক ছাড়াও উল্লেখযোগ্য এলামনাইদের মধ্যে ছিলেন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের ষষ্ঠ স্পিকার বিচারপতি আবদুল জব্বার খান; বাংলাদেশের ১১ তম রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস; বাংলাদেশের বিশিষ্ট দার্শনিক, শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, প্রবন্ধকার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক সরদার ফজলুল করিম

রংপুর জিলা স্কুল

এখন আমাদের আলোচনায় আসবে ভারতবর্ষের অন্যতম প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রংপুর জিলা স্কুল। রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলার তৎকালীন গভর্ণর লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক ১৮৩২ সালে রংপুরে একটি বিদ্যালয় উদ্বোধন করেন যার নাম দেয়া হয় জমিদার স্কুল।

১৮৬২ সালের দিকে এসে বিদ্যালয়য়ের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় রংপুর জিলা স্কুল। স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পিছনে স্থানীয় জমিদারদের এবং ব্রিটিশ ইন্ডিয়া কোম্পানিতে কর্মরত জিলা সংগ্রাহক নাথান স্মিথের ভূমিকাই মুখ্য ছিলো। সেই সময়ে কুচ বিহার রাজা স্কুলের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। তার অনুদানের টাকায় স্কুলে দালান নির্মিত হয়।

আরেকটি দারুণ তথ্য হচ্ছে,  স্কুলটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের আওতাভুক্ত ছিলো ১৮৫৭ সাল থেকে, যেই সময়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে। স্কুলটির ১৯ শতকের দিকে অভাবনীয় সাফল্য লাভ করে। বৃহত্তর বাংলার প্রায় ৩৪টি স্কুলের মধ্যে রংপুর জিলা স্কুল ‘দ্বিতীয় শ্রেণির কলেজ’ হিসেবে মর্যাদা পায়।

Rangpur Zilla School gateAttribution: “File:Rangpur Zilla School gate.JPG” by Arghyabanik is licensed under CC BY-SA 3.0

ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন স্কুল হিসেবে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে এই বিদ্যালয়টি। বাংলার গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলি যেমন ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১ এর স্বাধীনতা আন্দোলনের স্মৃতিতেও স্কুলটির নাম চলে আসে।

উল্লেখযোগ্য এলামনাইদের মধ্যে আছেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সর্বকনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা প্রফুল্ল চাকী; বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া; বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক সেনা প্রধান মোহাম্মদ আতিকুর রহমান

ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল

রাজধানী ঢাকার প্রথম এবং বাংলাদেশের প্রাচীন স্কুল হিসেবে ঐতিহ্যের সাথে এখনও টিকে আছে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল। বিদ্যালয়টি পুরান ঢাকার সদরঘাট এ অবস্থিত। ইংরেজ মিশনারী জনাব রিজ স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করে ১৮৩৫ সালের দিকে। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল অবিভক্ত বাংলার প্রথম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়।

শুরুর দিকে বিদ্যালয়ের নাম ছিলো ঢাকা ইংলিশ সেমিনারী। এই ঢাকা ইংলিশ সেমিনারী থেকেই জন্ম হয় ঢাকা কলেজের যেখানে স্কুল শাখাটির নামকরণ করা হয় ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল।

এই ঐতিহ্যবাহী কলেজের এলামনাইগণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদার্থবিদ ও জীববিজ্ঞানী আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ; পদার্থবিজ্ঞানে থার্মাল আয়নাইজেসন তত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতা মেঘনাদ সাহা; বাংলা একাডেমীর সাবেক সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী; ভাষাবিদ, ও শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরী এবং আরও অসংখ্য গুণীজন।

রাউজান আর.আর.এ.সি. মডেল সরকারি হাই স্কুল

১৮৩৫ সালের দিকে চট্টগ্রামের রাউজানে জমিদার দাতারাম চৌধুরীর স্বদিচ্ছায় এবং মুন্সেফ জনাব শোকর আলীর সহযোগিতায় স্থাপিত হয়েছিলো একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় যা বর্তমানে রাউজান আর.আর.এ.সি. মডেল সরকারি হাই স্কুল নামে প্রতিষ্ঠিত।

যদিও এক সময়ে বিদ্যালয়টি আগুনে পুড়ে যায়। পরবর্তীতে নওয়াব আব্দুল গনির আর্থিক সহযোগিতায় পুনর্নির্মাণ করা হয়। এর পরেই বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তিত হয়ে করা হয় নওয়াব আব্দুল গনি নিউ ইংলিশ স্কুল। পরবর্তীতে ১৮৯৮ সালে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক বাবু ক্ষীরোদ চন্দ্র বিশ্বাস, জমিদার বাবু রামগতি ধর ও বাবু রামধন ধরের সহযোগিতায় রাউজান আর.আর.এ.সি. মডেল সরকারি হাই স্কুল উচ্চ বিদ্যালয়ের মর্যাদা পায়।

সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়

বাংলার শিক্ষা জগতে ঐতিহ্যবাহী আরেকটি সুপরিচিত বিদ্যালয় হচ্ছে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। ১৮৩৬ সালে মিশনারী মিঃ এডামের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠা পায় সিলেটের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কেন্দ্র সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের ১৮৫ বছরের ঐতিহ্যে অবদান রেখেছিলেন ডাব্লিও এইচ ফক্স, মিঃ রেভারেন্ড প্রাইজ, তৎকালীন ভেপুটি ইনস্পেক্টর অব স্কুলস মিঃ রায় প্রমুখ।

এই বিদ্যালয়টি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতি বহন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়কে মিলিটারীদের জন্য রিকুইজেশন করা হয়।

সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য এলামনাইগণের মধ্যে আছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী জনাব আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর এবং ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ড. মোঃ ফরাস উদ্দিন, সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী, অধ্যাপক ও লেখক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য প্রফেসর ড. সদরুদ্দিন আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।

চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল

চট্টগ্রাম বিভাগের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের যাত্রা শুরু হয়েছিলো ১৮৩৬ সালে। লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক এর কাছে আসা প্রস্তাবনা থেকেই মূলত চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের যাত্রা শুরু হয়।

সে সময়কার বুদ্ধিজীবীরা চিন্তা করেছিলো বাংলার শিক্ষা উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা। বিজ্ঞান, মানবিক শাখায় শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলো ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের। তারপরেই এই ধারনার জনপ্রিয়তার কারণে ঢাকার বাইরেও এর বিস্তার লাভ করে । চট্টগ্রামের শিক্ষা উন্নয়নে এই বিদ্যালয়টির অবদান ছিলো অকল্পনীয় ।

এই বিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য এলামনাইগণদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ আফছারুল আমীন; শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞান লেখক, বিজ্ঞান কর্মী আবদুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দিন; সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী;
বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান; পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক গভর্নর জাকির হোসেন; নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস; জনপ্রিয় লেখক ও সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ এবং আর অনেক গুনি ব্যক্তিত্ত।

45718368292 873eb9196b bAttribution: “Chittagong Collegiate School” by Moheen is licensed under CC BY-NC 2.0

কুমিল্লা জিলা স্কুল

কুমিল্লা তথা সমগ্র বাংলাদেশের অন্যতম সুপ্রাচীন বিদ্যাপীঠ কুমিল্লা জিলা স্কুল। ৫ জন ইউরোপীয়ান, ১ জন হিন্দু ও ৩ জন মুসলমান দিয়ে তৈরি কমিটি নিয়ে স্থানীয় ম্যাজিষ্ট্রেট অফিসের তৎকালীন প্রধান কারণিক মি: হেনরী জর্জ লাইচেস্টার ১৮৩৭ সালের ২০ শে জুলাই কুমিল্লা জেলা স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

১৮৩৯ সাল থেকে মি: হেনরী জর্জ লাইচেস্টার তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কুমিল্লার বিখ্যাত দীঘি ধর্মসাগরের পাড়ে একটা বাংলোতে প্রথম এর ক্লাশ শুরু হয়।

যশোর জিলা স্কুল

১৮৩৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ১৩২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলার অন্যতম প্রাচীনতম এবং ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় যশোর জিলা স্কুল। শুরুতে বিদ্যালয়টির নাম ছিল যশোর মডেল স্কুল যা ১৮৭২ সালে এসে যশোর জিলা স্কুলে নামকরণ করা হয়। এই বিদ্যালয়টির প্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন মি: জে. স্মিথ

আরেকটি ঐতিহ্যবাহী দিক হচ্ছে, এই স্কুলটিতে পড়িয়েছেন ভারতীয় উপমহাদেশের স্মরণীয় বাঙালি ও বাংলাদেশী ব্যক্তিত্ব, বহুভাষাবিদ, বিশিষ্ট শিক্ষক ও দার্শনিক ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। এছাড়া ইতিহাসের আরও অনেক বরেণ্য গুণী ব্যক্তিরা এই স্কুলটির শিক্ষকতা করেছিলেন। তাদের মধ্যে কৃষ্ণ চন্দ্র মজুমদার, আনিস সিদ্দিকি,জিল্লুর রহমান সিদ্দিকি, সিরাজুদ্দিন হোসেন,প্রফেসর মোহম্মদ মনিরুজ্জামান, এবং কমরেড আব্দুল হক উল্লেখযোগ্য।

এইবার আসা যাক এই বিদ্যালয়ের খ্যাতনামা শিক্ষার্থীদের তালিকাতে। অনেক ব্যক্তিত্বের মাঝে উল্লেখযোগ্য এলামনাই হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান; পরমাণু বিজ্ঞানী, গবেষক প্রফেসর ড. এম. শমশের আলী; প্রফেসর ডঃ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ; প্রফেসর শরীফ হোসেন; জ্যোতিস্ক বিজ্ঞানী রাধাগোবিন্দ চন্দ্র।

ইতিহাসের পাতা উল্টালেই চোখের সামনে ভেসে আসে এই প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়গুলির নাম। ঐতিহাসিক রাজনীতিবিদ, বিজ্ঞানী, সমাজসেবকদের শিক্ষার ভিত্তি তৈরি করার ক্ষেত্রে এবং শিক্ষার প্রবেশদ্বার হিসেবে এই বিদ্যালয়গুলির ভূমিকা অপরিসীম।

কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন আপনার জানা প্রাচীন বিদ্যালয়টির যা বাদ গিয়েছে তালিকা থেকে!

তথ্যসুত্রঃ

Leave a Reply