ঋণ মুক্তির দোয়া ও আমল

আল্লাহর কাছে ঋণ মুক্তির জন্য দোয়া করা এবং কিছু বিশেষ আমল করা ইসলামিক সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রথা। ঋণ পরিশোধ করা একটি গুরুত্বপুর্ণ দায়িত্ব এবং ইসলাম ধর্মে এর প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর সাহায্য চেয়ে সঠিক নিয়মে দোয়া ও আমল করা একটি কার্যকর উপায় হতে পারে ঋণ মুক্তির জন্য।

নিচে ঋণ মুক্তির জন্য কিছু দোয়া ও আমল দেওয়া হলো:

ঋণ মুক্তির জন্য দোয়া

১. রাসূলুল্লাহ (সা.) এর একটি দোয়া:

নবী মুহাম্মদ (সা.) এর নির্দেশিত একটি বিশেষ দোয়া রয়েছে যা ঋণ থেকে মুক্তির জন্য পড়া যেতে পারে। দোয়াটি হলো:

“اللهم اكفني بحلالك عن حرامك، وأغنني بفضلك عمن سواك”

উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মাকফিনি বিহালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আঘনিনি বিফদলিকা আম্মান সিওয়াক।”

অর্থ: “হে আল্লাহ! হালাল মাধ্যমে আমাকে হারাম থেকে রক্ষা করুন এবং তোমার অনুগ্রহের মাধ্যমে অন্যদের থেকে আমাকে নির্ভরহীন করুন।”

২. দোয়া আল্লাহর কাছে ঋণ থেকে মুক্তি চাইতে:

“اللهم إني أعوذ بك من الهم والحزن، وأعوذ بك من العجز والكسل، وأعوذ بك من الجبن والبخل، وأعوذ بك من غلبة الدين وقهر الرجال”

উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজানি, ওয়া আউযুবিকা মিনাল আজজি ওয়াল কাসলি, ওয়া আউযুবিকা মিনাল জুবনি ওয়াল বুখলি, ওয়া আউযুবিকা মিন গালাবাতিদ্দাইনি ওয়া কাহরির রিজাল।”

অর্থ: “হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে উদ্বেগ ও দুঃখ থেকে, অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, কাপুরুষতা ও কৃপণতা থেকে, ঋণগ্রস্ততার ভার ও মানুষের নিপীড়ন থেকে আশ্রয় চাই।”

ঋণ মুক্তির আমল

১. নামাজে স্থিরতা:

দৈনন্দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া এবং আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নামাজে আল্লাহর কাছে ঋণ মুক্তির জন্য দোয়া করুন এবং প্রার্থনা করুন যেন আল্লাহ আপনার জন্য সহজ পথ সৃষ্টি করেন।

২. সূরা আলে-ইমরান পাঠ করা:

একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) সাহাবাদের সূরা আলে-ইমরানের আয়াত ২৬-২৭ পাঠ করতে বলেছিলেন। এই আয়াতগুলো পড়লে আল্লাহর থেকে ঋণ মুক্তির সহায়তা পাওয়া যায়।

সূরা আলে-ইমরান, আয়াত ২৬-২৭: “কুলিল্লাহুম্মা মালিকাল মুলকি, তু’তিল মুলকা মান তাশাউ, ওয়াতাঞ্জিয়ু মুলকা মিম্মান তাশাউ, ওয়া তু’ইয্যু মান তাশাউ, ওয়া তুজিল্লু মান তাশাউ, বিয়াদিকাল খইর। ইন্নাকা আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর।”

৩. সদকা ও দান করা:

ইসলাম ধর্মে দান ও সদকার বড় ফজিলত রয়েছে। ঋণ থেকে মুক্তির জন্য নিয়মিত সদকা করা ভালো আমল বলে গণ্য হয়। আল্লাহ তাআলা দানকারীদের দান বাড়িয়ে দেন এবং তাদের দুঃখ-কষ্ট দূর করেন।

৪. ইস্তেগফার পাঠ করা:

যতবার সম্ভব ইস্তেগফার (আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা) পাঠ করুন। আল্লাহ তাআলা ইস্তেগফারের মাধ্যমে বান্দার জন্য রিজিক ও বরকতের দরজা খুলে দেন।

ইস্তেগফারের সহজ পাঠ: “আসতাগফিরুল্লাহ্‌”

এর অর্থ হলো: “আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।”

উপসংহার

ঋণ মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা এবং সৎ কাজ করা আমাদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে। নিয়মিত দোয়া ও ইবাদত করলে আল্লাহ তাআলা আমাদের দুঃখ-কষ্ট দূর করেন এবং ঋণ থেকে মুক্তি দেন। উপরোক্ত দোয়া ও আমলগুলোর সাহায্যে ঋণ মুক্তির জন্য আল্লাহর অনুগ্রহ কামনা করতে পারেন।

About Mahmud

Leave a Reply