আখেরি চাহার সোম্বা ২০২৪

আখেরি চাহার সোম্বা ২০২৪: ইতিহাস ও তাৎপর্য

আখেরি চাহার সোম্বা ইসলামের অন্যতম ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ দিন, যা প্রতি বছর হিজরি বর্ষপঞ্জির সফর মাসের শেষ বুধবার পালন করা হয়। ২০২৪ সালে আখেরি চাহার সোম্বা পালিত হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। এই দিনটি মূলত শেষবারের মতো মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সুস্থতার কথা স্মরণ করে পালন করা হয়। মহানবী (সা.) এর জীবনকালীন সময়ে এটি ছিল তাঁর শেষ সুস্থতা বোধের দিন, এরপর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কিছুদিন পরে ইন্তেকাল করেন। তাই দিনটি মুসলমানদের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

আখেরি চাহার সোম্বার ইতিহাস

আখেরি চাহার সোম্বার ইতিহাসকে ইসলামের প্রাথমিক যুগের ঘটনাবলী থেকে উদ্ভূত বলে মনে করা হয়। হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর জীবনের শেষ বছর সফর মাসের শেষ বুধবারে কিছুটা সুস্থ বোধ করেন। সাহাবীগণ এই দিনটি তাঁর সুস্থতার দিন হিসেবে উদযাপন করেছিলেন। ইসলামী ইতিহাসে এই দিনটি একটি স্নেহময় ও আবেগপূর্ণ স্মৃতি বহন করে, কারণ এর কিছুদিন পরেই মহানবী (সা.) এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।

আখেরি চাহার সোম্বার তাৎপর্য

আখেরি চাহার সোম্বা মূলত ইসলামী ভাবধারায় একটি উৎসবমুখর দিন। বিভিন্ন মুসলিম সম্প্রদায়ে এ দিনটি নির্দিষ্ট আচার-অনুষ্ঠান এবং ইবাদতের মাধ্যমে পালন করা হয়। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এ দিনে মহানবী (সা.) এর স্মৃতিচারণ, নফল নামাজ আদায়, কুরআন তিলাওয়াত এবং বিশেষ দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করেন। এছাড়াও, মুসলমানরা বিভিন্ন স্থানে মসজিদ ও দরগাহে গিয়ে দরুদ ও সালাম পাঠ করেন এবং দান-সদকা করেন।

আখেরি চাহার সোম্বার ধর্মীয় দিক

এ দিনটি পালনে ইসলামের মধ্যে মতভেদ আছে। কিছু মুসলিম সম্প্রদায় এই দিনটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আধ্যাত্মিক বলে মনে করে, অন্যদিকে, কিছু মুসলিম গোষ্ঠী এ দিনে কোন বিশেষ ইবাদত বা অনুষ্ঠান পালন করে না। তবে, সাধারণভাবে মুসলমানদের মধ্যে এ দিনটি নবীর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের একটি মাধ্যম হিসেবে পালিত হয়।

আখেরি চাহার সোম্বা উদযাপনের রীতি

  • বিশেষ নামাজ ও দোয়া-মোনাজাত: অনেক মুসলিম এ দিনে মহানবীর (সা.) সুস্থতার স্মরণে বিশেষ নামাজ ও দোয়া-মোনাজাত করেন। তাঁরা মহানবী (সা.) এর সুস্থতার জন্য আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তাঁর জীবনের আদর্শ অনুসরণে দোয়া করেন।
  • কুরআন তিলাওয়াত: এ দিনটি কুরআন তিলাওয়াতের জন্য বিশেষ সময় বলে মনে করা হয়। মুসলিমরা কুরআন তিলাওয়াত করেন এবং নবীজীর প্রতি দোয়া করেন।
  • দান-সদকা: আখেরি চাহার সোম্বায় দান-সদকা করা ইসলামী সমাজে একটি সাধারণ প্রথা। এ দিনটিতে অনেকেই গরীবদের সাহায্য করে থাকেন।

আখেরি চাহার সোম্বার আধুনিক প্রেক্ষাপট

বর্তমান সময়ে আখেরি চাহার সোম্বা পালনের রীতি অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। অনেক মুসলিম পরিবার এবং সমাজে এ দিনটি এখনও আধ্যাত্মিক ও ঐতিহ্যবাহী হিসাবে পালিত হয়, বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মাঝে এ দিনটি নিয়ে নানা রকম আয়োজন লক্ষ্য করা যায়, যেমন মসজিদে বিশেষ মাহফিল এবং ধর্মীয় আলোচনা।

উপসংহার

আখেরি চাহার সোম্বা একটি বিশেষ দিন যা মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক তাৎপর্য বহন করে। এটি ইসলামের প্রাথমিক যুগের একটি মূল্যবান স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে স্মরণীয়। নবীজীর প্রতি শ্রদ্ধা এবং তাঁর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুসলিমরা এ দিনটি উদযাপন করে থাকেন। ২০২৪ সালে, আখেরি চাহার সোম্বা উদযাপন মুসলিম সম্প্রদায়ের মাঝে আরও ঐক্য ও ভালোবাসার প্রতীক হয়ে উঠবে।

About Mahmud

Leave a Reply