হরমোন বেশি হলে কি বাচ্চা হয় না

হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সন্তানধারণে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সাধারণত, নারীদের প্রজননক্ষমতা ও সন্তানধারণের ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট হরমোনের মাত্রা সঠিক মাত্রায় থাকা গুরুত্বপূর্ণ। যখন এই হরমোনের মাত্রায় অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, তখন তা সন্তান ধারণের প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে।

হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে সন্তানধারণে সমস্যা

নারীদের ক্ষেত্রে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন রয়েছে, যা সন্তানধারণের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত:

  1. এস্ট্রোজেন: অতিরিক্ত এস্ট্রোজেনের মাত্রা ওভারিয়ান সিস্ট বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম (PCOS) সৃষ্টি করতে পারে। PCOS হরমোনের অস্বাভাবিকতা তৈরি করে, যা ডিম্বাণু উৎপাদন ও মুক্তির প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে।
  2. প্রজেস্টেরন: প্রজেস্টেরনের স্বাভাবিক মাত্রা জরায়ুর আস্তরণকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে, যা গর্ভধারণের জন্য জরুরি। এই হরমোনের ঘাটতি থাকলে, জরায়ুর আস্তরণ ঠিকভাবে গঠিত হয় না, যার ফলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যায়।
  3. টেস্টোস্টেরন: টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বেশি থাকলে মহিলাদের ক্ষেত্রে মাসিক চক্রে অনিয়ম হতে পারে এবং এতে ডিম্বাণু উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
  4. থাইরয়েড হরমোন: হাইপোথাইরয়েডিজম বা হাইপারথাইরয়েডিজমের কারণে প্রজননক্ষমতায় বিঘ্ন ঘটতে পারে। এই অবস্থায় মাসিক চক্রের পরিবর্তন, অনিয়মিত বা বন্ধ মাসিক এবং গর্ভপাতের সম্ভাবনা বাড়তে পারে।
  5. প্রল্যাকটিন: প্রল্যাকটিন হরমোন স্তন্যপান বা দুধ উৎপাদনের জন্য জরুরি। তবে অতিরিক্ত প্রল্যাকটিন উৎপাদন গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে এবং মাসিক চক্রে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।

পুরুষদের ক্ষেত্রে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা

পুরুষদের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত বা অল্প টেস্টোস্টেরন উৎপাদন সন্তানধারণের সম্ভাবনা কমাতে পারে। টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে গেলে শুক্রাণু উৎপাদনে সমস্যা হতে পারে এবং শুক্রাণুর গুণগতমান কমে যেতে পারে।

চিকিৎসা ও পরামর্শ

যদি হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে গর্ভধারণে সমস্যা দেখা দেয়, তবে একটি হরমোনাল প্রোফাইল পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপর, ডাক্তার হরমোনের মাত্রা ঠিক রাখতে সঠিক ওষুধ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা গ্রহণের পরামর্শ দিতে পারেন। এছাড়া, নির্দিষ্ট খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম এবং জীবনধারার পরিবর্তনের মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রেই হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

তবে, সঠিক চিকিৎসা এবং নির্দিষ্ট নির্দেশনা মেনে চললে অনেক ক্ষেত্রেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। তাই, সন্তানধারণের ইচ্ছা থাকলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

About Mahmud

Leave a Reply