ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসেনের আদালত বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) অবৈধভাবে সচিবালয়ে প্রবেশ, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং নাশকতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ২৬ শিক্ষার্থীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরা সবাই এইচএসসি পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ছিল।
কারাগারে পাঠানো শিক্ষার্থীরা হলেন: জহিরুল ইসলাম, ফয়সাল হাসান, রায়হান হোসেন, রুবেল আহম্মেদ, রিয়াদ মাহমুদ, মেজবাউল রহমান মিল্লাদ, মেহেদী হাসান, সোহান, ইমরান হোসেন আরমান, মেহেদী হাসান অন্তর, সাগর, রোহান, শাহরিয়ার হোসেন সোয়াদ, আহাম মোল্লা, সোহান, মাসনুন, নাঈম, ইমাম হাসান, শাকিল, সেলিম, সাকলাইন মুস্তাক, হানজালাল, মশিউর রহমান, প্রান্তিক, তাছিম রহমান, এবং রবিন মিয়া।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক একরামুল হক তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন, তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন জানান। শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং আগামী রোববার জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
এর আগে, গত বুধবার নতুন করে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দাবিতে সচিবালয়ে প্রবেশ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীদের একটি দল। এ সময় ৫৪ জনকে আটক করা হয়, যাদের মধ্যে ২৮ জনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ে ঢুকেছিল হয়ত পূর্বের স্বৈরশাসকের উসকানিতে, অথবা একেবারেই বোকামির কারণে। তবে যে প্রশ্নটি জাগে, তা হলো, সংবাদ্গুলোর ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পুলিশ ও সেনাবাহিনি তাদের উপর হামলা চালাচ্ছে।
এ ঘটনাটি স্পষ্টভাবে তুলে ধরে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির একটি বিপজ্জনক দিক। সচিবালয়ে ঢুকে পড়া এই শিক্ষার্থীদের প্রতি পুলিশের আচরণ ছিল অত্যন্ত ভয়ানক। যমুন টিভির একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে পুলিশ তাদের পিটাচ্ছে, নারীদেরকেও ধাক্কা দিচ্ছে, কিল্ ঘুষি এবং পড়ে যাওয়া শিক্ষারথিকে বুট দিয়ে লাথি দিচ্ছে। পুলিশের এই হিংস্রতা তো আর নতুন কিছু নয়। এটা আমরা খুব নিকট অতিতেই দেখেছি। এটি আগামিতে আরও তিব্রভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।
খুনের আসামিকেও এমনভাবে পেটানোর অধিকার কি পুলিশের আছে? তবে যে বাহিনী সাধারণ মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালাতে পারে, তাদের এমন আচরণে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আসলে, সরকার বদল, বিপ্লব, বা অভ্যুত্থান কিছুই বাংলাদেশে পুলিশের এই আচরণ পরিবর্তন করতে পারেনি।
অতীতেও জনগন পুলিশের এই আচরনে অনেকটা নিরবিকার হয়েই গেছে, বিশেষ করে যারা এই সম্প্রতি মেশিনগান নিয়ে জনগনের উপর ব্রাশ ফায়ার করেছে, তাদের এই আচরন আসলে এই অরজকতার দেশে আগের থেকে কিছুটা হলেও ভালো বলা চলে, হাজার হোক গুলি তো চালায়নি।
এই হলো আমাদের সাধীনতার চিত্র।