বদনজর দূর করার উপায়

বদনজর বা ‘নজর লেগে যাওয়া’ বলতে সাধারণত নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাবকে বোঝানো হয়, যা কোনো ব্যক্তির স্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি বা জীবনের অন্য কোনও দিককে ক্ষতির মুখোমুখি করতে পারে। যদিও বিজ্ঞান এই ধারণাকে সমর্থন করে না, অনেক সংস্কৃতিতে এবং ধর্মে বদনজর দূর করার কিছু প্রচলিত উপায় বা পদ্ধতি রয়েছে। নিচে বদনজর দূর করার কিছু সাধারণ উপায় তুলে ধরা হলো:

ইসলামিক পদ্ধতি

ইসলামে বদনজর দূর করার জন্য কিছু বিশেষ দোয়া এবং আমল রয়েছে:

  1. সুরা আল-ফালাক এবং সুরা আন-নাস: বদনজর থেকে সুরক্ষার জন্য প্রতিদিন সুরা আল-ফালাক এবং সুরা আন-নাস তিলাওয়াত করা খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়।
  2. আয়াতুল কুরসি: বদনজর থেকে সুরক্ষার জন্য আয়াতুল কুরসি পাঠ করা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  3. রাসুল (স.) এর দোয়া: রাসুল (স.) বদনজর দূর করার জন্য এই দোয়াটি পড়তেন –
    “আউ’যু বিকালিমাতিল্লাহি তাম্মাতি মিন শাররি মা খলাক।”
    এর অর্থ হলো – “আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণী দ্বারা আমি তাঁর সৃষ্টির অমঙ্গল থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।”
  4. তিনবার থুতু ফেলা: বদনজর দূর করার জন্য নিজের বাম দিকে তিনবার থুতু ফেলে আবার তিলাওয়াত করা উচিত বলে পরামর্শ দেওয়া হয়।

অন্যান্য উপায়

অনেক সংস্কৃতিতে বদনজর থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করা হয়। যেমন:

  1. লবণের ব্যবহার: বদনজর থেকে মুক্তি পেতে শরীরের চারপাশে লবণ ছিটিয়ে দিয়ে পরে সেই লবণ দূরে ফেলে দেওয়া হয়। এটি বদনজরকে দূর করতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হয়।
  2. কালো ডোর বা তাবিজ: অনেকেই মনে করেন, কালো ডোরি বা তাবিজ পরে থাকলে তা বদনজর থেকে রক্ষা করে। তাবিজের মধ্যে কুরআনের আয়াত থাকলে তা বদনজর থেকে সুরক্ষা দেবে বলে বিশ্বাস করা হয়।
  3. লেবু, লঙ্কা এবং সর্ষে: ভারতে বদনজর থেকে মুক্তি পেতে লেবু, লঙ্কা এবং সর্ষের দানা দিয়ে এক ধরনের প্রতীক তৈরি করা হয় এবং তা বাড়ির প্রবেশপথে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
  4. ডিম বা পেঁয়াজ ব্যবহার: শরীরের চারপাশে একটি ডিম বা পেঁয়াজ নিয়ে তিনবার ঘোরানো এবং তা দূরে ফেলে দেওয়া হলে বদনজর দূর হবে বলে বিশ্বাস করা হয়।

সতর্কতা ও পরামর্শ

যদিও বদনজর নিয়ে বিভিন্ন সংস্কৃতিতে প্রচলিত নানা কুসংস্কার রয়েছে, তবে এটি সাধারণত মানুষের মানসিকতা ও বিশ্বাসের ওপর নির্ভরশীল। বদনজর এড়ানোর জন্য মূলত ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখা, আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা এবং নিয়মিত নামাজ পড়া জরুরি। কোনো ব্যক্তি যদি বদনজর বা নেতিবাচক প্রভাব অনুভব করেন, তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

বিশ্বাস এবং দোয়া দিয়ে বদনজরের মতো নেতিবাচক প্রভাব দূর করা সম্ভব হতে পারে। তাই বদনজর থেকে সুরক্ষার জন্য দোয়া এবং আমল বজায় রাখুন এবং আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন।

About Mahmud

Leave a Reply