পাসপোর্ট অফিসে দূরনীতি হয় কিভাবে ?

আমি পাসপোর্ট রিনিউ করতে গিয়েছিলাম তখন যেহেতু পাসপোরটের সব ডকুমেন্টস প্রথম বারই দেয়া হয়েছে তাই আমি চেক করে দেখেছি বিদেশে রিনিউ করতে এত ডকুমেন্টস লাগেনা।

পাসপোর্ট অফিসে দূরনীতি এরা করে লিগালিটির ফাক দিয়ে। সরকারি ক্ষুদ্র কিছু নিয়ম ভাংগিয়ে তারা মানুষকে হয়রানি করতে থাকে দালাল ধরতে বাধ্য করার জন্য।

প্রথমত, তারা আপনি যখন রিনিউ এর জন্য যাবেন তারা কয়েকটা ডকুমেন্টস লাগবে দেখাবে। আপনি হয়তো অবাক হবেন যেহেতু ডকুমেন্টস সব তো দেয়াই আছে, রিনিউএর জন্য এতকিছু লাগবে কেনো। কিন্তু এসব ভেবে লাভ নেই, তারা যেহেতু বলেছে লাগবে, তাই লাগবে।

এরপর আপনি ডকুমেন্টসগুলো নিয়ে যাবে, তারা এর মধ্যে খুত বের করবে কিংবা এমন কিছু বলবে যেটা আবার নতুন কিছু একটা যেমন ধরুন উল্লিখিত ডকুমেন্টসের মধ্য থেকেই এমন কিছু চাইবে যেটা চাইবে ধারনা করতে পারবেননা, যেহেতু এন আইডি কিংবা বারথ সারটিফিকেট কিংবা দুটো নিলেই আর কিছু লাগার কথা নয় তারা আপনার বরতমান আড্রেসের প্রমান দাখিল করতে বলবে।

ট্রিকটা হলো, তারা সব কিছু একবারে চাইবেনা, প্রথমবার একটা ডকুমেন্টসে টীক দিয়ে দেবে, এবং, এই ডকুমেন্টস আনতে হয়তোবা সরকারি অফিসে যেতে হবে। তাই সারাদিন শুধু ডকুমেন্টস লাগবে এটা জানার জন্য আপনাকে লাইনে দাঁড়িয়ে ওখানে যেতে হবে। তারপর যখন সেই ডকুমেন্টস নেই দেখে ওইদিন ব্যরথ হয়ে বের হবেন সামনে দালালেরা দাঁড়িয়ে থাকবে, এই দালালেরা একটা টাকার বিনিময়ে সব কাজ করে দিতে চাইবে। আমি মোটামুটি নিশ্চিত এই টাকার মেজর ভাগ পাসপোরট অফিসারদের পেটেই যায়, এইসব ছোকরারা এত টাকা হজম করার যোগ্যতা রাখেনা। আমার কাছে এরা ২ হাজার টাকা চেয়েছিলো। ১০ জন মানুষ রাজী হলেই বিশ হাজার টাকা।

এভাবে আপনি ঐদিন চলে যাবে। পরবরতিতে আপনি সরকারি অফিসে পিয়নকে “বখশিস” দিয়ে আশা করবেন হয়তো ডকুমেনটস কিছু তারাতারি পাবেন।

এরপর, সেই ডকুমেন্টস নিয়ে আপনি আবার হয়তো ৩-৪ দিন পর করম ব্যস্ততার মাঝে একদিন সময় করে যাবেন, লাইনে আগে থাকার আশায় ভোরে যাবেন, তারপর ৩-৪ ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর পৌছাবেন অফিসার এর কাছে। সে খুব মনজোগের সাথে ডকুমেন্টস দেখে আবার আরেকটা ডকুমেন্ট আনতে বলবে। হয়তো বা আপনি যে কাজ করেন সেই কাজের কোন ডকুমেন্টস। আপনি ওইদিন আবারও ব্যরথ হয়ে বের হবেন, সামনে দালালেরা দাঁড়িয়ে আবারও লোভ দেখাবে, আপনার বয়স যদি বেশি হয় তাহলেই আপনি বেশি প্রলুব্ধ হবেন এতে কারন এভাবে এত দৌড়াদৌড়ি করা আপনার জন্য তখন খুবই কস্ট হবে।

এভাবে বেশ কয়েকবার আপনাকে যাওয়া আসার উপরেই থাকতে হবে এবং প্রতিবার তারা নতুন আরকটা ডকুমেন্ট দেখতে চাইবে। এগুলো তারা মুলত আপনার ফরমের নিরবাচনের উপর ভিত্তি করে করে বের করবে। তারা চেস্টা করবে যেনো আপনি ক্লান্ত হয়ে দালালের কাছে যান। কারন এটাই তাদের উপরি খাবার উপায়।

এখন পাসপোরট অফিসেই কমপ্লেইন জানানোর নাম্বার আছে, এগুলো কোন কাজের না। আমি একবার দুরনিতি দমন কমিশনের অফিসে দালালের ফোন নাম্বার সহ পাঠিয়েছিলাম, কিছুই হয়নি। পাসপোরট অফিসের হেল্প ডেস্কে যেমন কেউ বসেনা, অনুপস্থিত থাকে, ঠিক সেভাবে আপনার এই অভিজোগ কোন মানুষের কাছে পৌছায়না, ইনবক্সেই রয়ে যায়। এভাবে সাধারন মানূষের ইগ্নোরেন্স আর স্টুপিডিটিতে জমতে থাকা দুরনিতি গুলো আপনার উপর তো বটেই, আপনার পরের জেনারেশনের উপরও জেকে বসে। প্রশ্ন করতে পারেন আপনার কি করার ছিলো, আপনার করার ছিলো একটাই, সেটা হলো পাশের লোকটাকে সাপোড়ট দেয়া। নিজের আখের গুছানোর চেস্টা না করে, সবাই মিলে যদি অফিসার কয়েকটা পিটীয়ে মেরে ফেলতেন গনধোলাই দিয়ে, তাহলে কি ঐখানে দুরনিতি কমতোনা ? অবশ্যই কমতো, কারন, যখন আইন আপনার ন্যয় বিচার দেয়না তখন সেই আইনের ভরসায় থাকলে আপনি সভাবতই বিচার পাবেননা। তখন জনগনকে নিজেরা নিজেরাই বিচার করতে, সব ভালো মানূষেরা ঔক্যবদ্ধ ভাবে দুরনিতিবাজদের পিটিয়ে মারতে হয়। আর তা যে জাতি পারেনা, সেই জাতি সব সময় দুরনিতিগ্রস্তই থাকে। সেই দেশ জাহান্নামের মত হয়ে যায়।

About Mahmud

Leave a Reply