জানাজার নামাজ মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত, যা মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া হিসেবে আদায় করা হয়। এটি ফরজে কিফায়া অর্থাৎ, সমাজের কিছু লোক জানাজার নামাজ পড়লে বাকিরা মুক্ত থাকে; তবে কেউ না পড়লে সবাই গুনাহগার হয়। এখানে জানাজার নামাজের নিয়ম এবং ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
জানাজার নামাজের নিয়ম
জানাজার নামাজ চার তাকবির নিয়ে আদায় করা হয়, এবং এতে রুকু ও সিজদা নেই। জানাজার নামাজের ধাপগুলো হলো:
- প্রথম তাকবির: ইমাম “আল্লাহু আকবার” বলে হাত বেঁধে দোয়া করেন। প্রথম তাকবিরের পর সূরা আল-ফাতিহা পড়তে হয়।
- দ্বিতীয় তাকবির: ইমাম আবার “আল্লাহু আকবার” বলেন। এরপর দরুদ শরিফ পড়তে হয়, যেমন, দরুদে ইব্রাহিম।
- তৃতীয় তাকবির: তৃতীয় তাকবিরের পর মৃত ব্যক্তির জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। সাধারণত নিম্নোক্ত দোয়া পড়া হয়:
اللهم اغفر لحينا وميتنا وشاهدنا وغائبنا وصغيرنا وكبيرنا وذكرنا وأنثانا اللهم من أحييته منا فأحيه على الإسلام ومن توفيته منا فتوفه على الإيمان
- চতুর্থ তাকবির: চতুর্থ তাকবিরের পর সংক্ষিপ্ত দোয়া করে ডান পাশে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করা হয়।
জানাজার নামাজের ফজিলত
- অশেষ সওয়াব: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ পড়ে, সে এক কিরাত পরিমাণ সওয়াব পায়, আর যে ব্যক্তি জানাজার সাথে কবর পর্যন্ত যায়, সে দুই কিরাত পরিমাণ সওয়াব পায়।” এক কিরাতকে উহুদ পর্বতের সমান বলা হয়েছে।
- মৃত ব্যক্তির জন্য রহমত: জানাজার নামাজ মৃত ব্যক্তির জন্য রহমতের দোয়া হিসেবে কাজ করে। এতে মৃত ব্যক্তি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা পায়।
- সামাজিক দায়িত্ব: জানাজার নামাজ সমাজের মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধভাবে মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করার সুযোগ তৈরি করে। এটি মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক সহানুভূতি ও সহমর্মিতা বৃদ্ধি করে।
জানাজার নামাজ আদায় করার মাধ্যমে মুসলমানরা মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তির জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে এবং নিজেদের ওপর ফরজে কিফায়া আদায় করে।