চুলের যত্ন সম্পর্কে আপনার যা যা জানা প্রয়োজন
অনেকে সুন্দর চুলকে স্বাস্থ্য বা সৌন্দর্যের লক্ষণ হিসাবে দেখেন। আপনার দেহের অন্য যে কোনও অংশের মতো চুলেরও স্বাস্থ্যবান ও বিকাশ হতে বিভিন্ন ধরণের পুষ্টি দরকার, আসলে অনেক ধরনের পুষ্টির ঘাটতি চুল পড়ার সাথে যুক্ত।
বয়স, জিন এবং হরমোনের মতো উপাদানগুলি চুলের বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে। তবে চুলের সাস্থ রক্ষায় পুস্টির গুরত্ত অপরিসীম। যেসব ভিটামিনের সাথে চুলের বৃদ্ধি ও সাস্থ জড়িত সেগুলো হল যেমন –
বি-ভিটামিন
চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করার জন্য অন্যতম পরিচিত একধরনের বি-ভিটামিন হ’ল বায়োটিন।
গবেষণায় দেখা গেছে বায়োটিনের ঘাটতি হলে চুল ঝড়ে যেতে পারে (৫ টি বিশ্বাসযোগ্য উৎস)। বায়োটিন চুলপড়া রোধের বিকল্প চিকিৎসা হিসাবে ব্যবহার করা হয়, তবে যাদের আগে থেকেই বায়োটিনের ঘাটতি রয়েছে তারাই এর উপকারীতা সহজে বুঝতে পারবেন।
তবে বায়োটিনের ঘাটতি হওয়া খুব বিরল কারণ এটি প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন খাবারে পাওয়া যায়। স্বাস্থ্যবান ব্যক্তি যাদের চুল পড়ার সমস্যা নেই তাদের ক্ষেত্রে চুলের বৃদ্ধির জন্য বায়োটিন কার্যকর কিনা তা নিয়ে যথেস্ট তথ্যের অভাব রয়েছে।
অন্যান্য বি-ভিটামিনগুলি লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে, যা মাথার ত্বকে এবং চুলের গ্রন্থিতে অক্সিজেন এবং পুষ্টি বহন করে। এই প্রক্রিয়াগুলি চুলের বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ঢেকি ছাটা শস্য, বাদাম, মাংস, মাছ, সীফুড এবং গাঢ় রঙের শাকসব্জী সহ অনেক ধরনের খাবার থেকেই বি-ভিটামিন পেতে পারেন।
অতিরিক্তভাবে, পশু থেকে লব্ধ খাবারগুলো ভিটামিন বি-১২ এর একমাত্র ভাল উৎস। সুতরাং আপনি যদি নিরামিষভোজিদের ডায়েট অনুসরণ করে থাকেন তবে সাপ্লিমেন্ট গ্রহনের কথা বিবেচনা করুন। আপনি বি-ভিটামিন পরিপূরকগুলি অনলাইনে খুঁজে পেতে পারেন।
ভিটামিন সি
ফ্রি র্যাডিক্যাল চুলের বৃদ্ধি রোধ করতে পারে এবং আপনার চুলের বয়স বাড়িয়ে দেয়। ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা ফ্রি র্যাডিকালগুলির দ্বারা সৃষ্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস (৬টি বিশ্বস্ত উৎস) থেকে চুল রক্ষা করতে সহায়তা করে।
এছাড়াও, কোলাজেন নামে পরিচিত চুলের গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন তৈরি করতে আপনার দেহের ভিটামিন সি দরকার। একই সাথে, ভিটামিন সি আপনার শরীরে আয়রন শোষন করতে সহায়তা করে, যা চুল বাড়ার জন্য প্রয়োজনীয় একটী খনিজ উপাদান। স্ট্রবেরি, মরিচ, পেয়ারা এবং সাইট্রাস ফলগুলি (লেবু, কমলা, মাল্টা) ভিটামিন সি এর ভাল উৎস।
আয়রন
আয়রন আপনার কোষগুলিতে অক্সিজেন বহন করতে লোহিত রক্তকণিকাকে সহায়তা করে। এ কারনে চুলের বৃদ্ধি সহ অনেকগুলি শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ।
চুল পড়ার একটি বড় কারণ হচ্ছে আয়রনের ঘাটতি, যা রক্তাল্পতা সৃষ্টি করে। এটি মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায় (১০টি বিশ্বস্ত উৎস, ১১টি বিশ্বস্ত উৎস, ১২টি বিশ্বস্ত উৎস, ১৩টি বিশ্বস্ত উৎস)। আয়রনের বেশি রয়েছে এমন খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে ঝিনুক, ডিম, লাল মাংস, পালংশাক এবং মসুর ডাল। এছাড়া আয়রন সাপ্লিমেন্ট অনলাইনে পাওয়া যায়।
দস্তা
দস্তা চুলের টিস্যু বৃদ্ধি এবং মেরামতের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি চুলের ফলিকলের চারপাশের তেল গ্রন্থিগুলোকে সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে।
শরীরে দস্তার অভাবের একটি সাধারন লক্ষন হচ্ছে চুল পড়ে যাওয়া। গবেষণায় দেখা গেছে দস্তার সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারে দস্তার ঘাটতিজনিত চুল পড়া কমায় (১৬টি বিশ্বস্ত উৎস, ১৭টি বিশ্বস্ত উৎস)।
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে খুব বেশি মাত্রায় সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার চুল পড়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখতে পারে। তাই প্রাকৃতিক খাদ্য থেকেই দস্তা পাওয়া ভাল। দস্তা উচ্চ পরিমানে আছে এমন খাবারগুলি হচ্ছে ঝিনুক, গরুর মাংস, পালং শাক, কুমড়োর বীজ এবং মসুরের ডাল ইত্যাদি।
প্রোটিন
চুলের প্রায় পুরোটাই প্রোটিন দিয়ে তৈরি। চুলের বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ অপরিহার্য। গবেষনায় দেখা গেছে যে প্রোটিনের ঘাটতি চুলের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করতে পারে এবং এতে করে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে (১৮টি বিশ্বস্ত উৎস, ১৯টি বিশ্বস্ত উৎস, ২০টি বিশ্বস্ত উৎস)।
পশ্চিমা দেশগুলিতে প্রচুর পরিমানে প্রোটিনজাতীয় খাদ্য গ্রহনের কারনে প্রোটিনের ঘাটতি অত্যন্ত বিরল।
তথ্য উৎস- ইন্টারনেট
সাস্থবিষয়ক আরও কিছু লেখা পড়ুন –
বাত সম্পর্কে আপনার যা যা জানা প্রয়োজন
মাড়ির রোগের সাথে উচ্চ রক্তচাপের সম্পর্ক !
যাদের প্রচুর পরিমাণে হাত-পা ঘামে, তাদের কী কী করলে হাত-পা ঘামা কমবে?