নিউইয়র্কে ড. ইউনূসের পাশে থাকা তরুণকে ঘিরে বিতর্ক – কে এই জাহিন রাজিন?

নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের উদ্যোগে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশে থাকা এক তরুণকে ঘিরে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই তাকে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা দাবি করে বিতর্ক তৈরি করেছেন। এ তরুণের ছবি সম্প্রতি পতন হওয়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে দেখা গেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহফুজ আলম এই তরুণকে ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তরুণের পরিচয় ও তার বক্তব্য

ড. ইউনূসের প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, এই তরুণের নাম জাহিন রোহান রাজিন। তিনি হাইড্রোকো প্লাস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিজিআই ফেলো। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, তিনি অনুষ্ঠানটিতে সিজিআই ফেলো হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন। ড. ইউনূস যখন ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ডাকেন, তখন তিনি দর্শক সারিতে ছিলেন। দুই বিদেশি ব্যক্তি তাকে মঞ্চে যাওয়ার পরামর্শ দিলে, তিনি তাৎক্ষণিকভাবে মঞ্চে উঠেছিলেন।

জাহিন আরও জানান, তিনি ২০২১ সালের ইউনূস অ্যান্ড ইয়ুথ ফেলো। তার প্রতিষ্ঠান হাইড্রোকো প্লাসের কাজকে আরও এগিয়ে নিতে তিনি ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে চাচ্ছিলেন এবং সিজিআই-এর অনুষ্ঠানে তাকে দেখতে পেয়ে খুশি হন।

বিতর্কিত ছবি ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা

জাহিনের তাজুল ইসলামের সঙ্গে ছবিটি নিয়ে তৈরি বিতর্ক সম্পর্কে তিনি জানান, ২০২২ সালে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে তার প্রতিষ্ঠান একটি কাজ করে এবং সে সময় মন্ত্রীর সঙ্গে তার দেখা হয়। ওই সময় ছবিটি তোলা হয়েছিল, যা পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে তিনি আন্দোলন সমর্থন না করার প্রশ্নই ওঠে না বলে জানান।

ছাত্র আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া

অপরদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহফুজ আলম ওই তরুণকে ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে দাবি করেন এবং তাকে অনুষ্ঠানে ডেলিগেশন দলের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেননি। তার মতে, ওই তরুণ পূর্বপরিকল্পিতভাবে মঞ্চে ওঠেন এবং তাদের সামনে থেকে দ্রুত স্টেজে উঠে যান। তিনি তার ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, এই তরুণের উপস্থিতি সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা ছিল না এবং তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছিল।

ভবিষ্যতের সতর্কবার্তা

মাহফুজ আলম ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনায় আরও সতর্ক থাকার প্রতিশ্রুতি দেন এবং তিনি ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী হন।

সমাপনী

এই ঘটনা রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে নতুন আলোচনার সূত্রপাত করেছে, যা ছাত্র আন্দোলন এবং সরকারের মধ্যে সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলছে।

About Mahmud

Leave a Reply