আদ্-দ্বীন হাসপাতালে আমার অভিজ্ঞতা – আদ্-দ্বীন এক পরিচ্ছন্ন জাহান্নাম
আমার কাছে আর দ্বিতীয়বার সুজোগ হবেনা!
সিজারিয়ানের বেশ কিছুদিন আগে ফলো আপের সময় দিয়েছিল। ভেবেছি একজন ডাক্তারের সাথে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবো। নিচের কাউন্টারে যখন জানাই, তখন আমার রোগীকে নিয়ে দোতলায় গিয়ে বলতে বলছে যে – আমরা একজন প্রফেসর ডাক্তার দেখাবো। এখন আমার রোগী গিয়ে কিন্তু সেই কথাই বলছে। কিন্তু যারে বলেছে ও আবার ছিলো আবার এসিসটেন্ট প্রফেসর। এসিস্টেন্ট প্রফেসরের কাছে প্রফেস দেখাবো শুনে ওর আবার ইয়েটাতে অনেক লেগেছে। তাই রেগে গিয়ে আমার স্ত্রীকে বলছে সে নাকি কখনো আমার রোগিকে আর দেখবেনা। ওর কাছে নাকি আর সুজোগ পাবেনা আমার রোগী। এরপর সে আমার রোগিকে রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে বলে। একটা ডাক্তারের এত বড় ইয়ে থাকে কিভাবে! ওটা কি একটা ডাক্তার? না একটা অসভ্য জানোয়ার?
আসলে রোগির সাথে কাউকে যেতে দেয়না গাইনিতে, তানাহলে সাথে পুরুষ মানুষ থাকলে এইসব ডাক্তার তো থাপড়ে চেহারা জিওগ্রাফি পরিবর্তন করে দিতো মানূষে। কিন্তু ভেতরে যায় শুধু মাত্র রোগি। আর রোগির দুর্বলতার সুজোগ নিয়ে এরা ইচ্ছামত বিকৃত ব্যবহারের চর্চা করে এরা। এইধরনের ডাক্তার নিয়মিত গনধোলাইইয়ের ওপর রাখা হয়না দেখেই ওরা আজ এরকম।
আদ্-দ্বীন হাসপাতালের বেশ কিছু পলিসি মারাত্মক স্যাডিস্টিক।
আদদিনে রোগি নিয়ে যারা আসে, রোগিকে নিয়ে যাওয়া আসা, টেস, লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা এসব নিয়ে নিরঘুরম রাত কাটাতে হয় দিনের পর দিন। আবার আদ্-দ্বীন কর্তৃপক্ষ কিছুক্ষন পর পর সিকিউরিটি দিয়ে রোগীর কাহিল আত্মীয়স্বজনদের ঘুমাতেও দেয়না। হাসপাতালটির কোন জায়গাতেই এরা আপনাকে শান্তিতে ঘুমোতে দেবেনা। যে কয়দিন এখানে থাকতে হবে, মারাত্মকভাবে স্লীপ ডেপ্রাইভড করবে।
ইসলাম ধর্মের নাম ব্যবহার করে এরা যে ব্যবসা পেতে বসেছে, রোগির পরিবারকে নানা ভাবে হয়রানি করে। রুমের সামনে রোগীর কেউ দাড়ালে বার বার সিকিউরিটি সরে যেতে বলে, আবার কয়েক সেকেণ্ড পরে বের হয়ে রোগীর লোকজন কোথায় খোজে ওষুধ আনার জন্য কিংবা টেস্টের জন্য। কি বিচিত্র সেচ্ছাচাড়িতার মুল্লুক। তোরা নিজেরা যদি বিশ্যের অন্যান্য দেশের মত সবকিছু প্রোভাইড করতি তাহলে না সেসব দেশের সিস্টেমে রোগির আত্মিয়সজনদের আর কাছে ঘুর ঘুর করা লাগতোনা।
রোগীর বেডে মহিলা ছাড়া পুরূষ ঢুকতে পারবেনা, তাহলে পানি খাবার কিংবা রোগীর ব্যাগ একটু ভারি হলে সেটা টেনে রোগির বেড পরযন্ত নেবার জন্য ওদের কি কোন বাপ খাড়া করা আছে? নেই। সাথে যে মহিলা পরিজন থাকবে তাকে আপ্রান চেস্টা করে ব্যাগ টেনে ওয়ারডের বেড পর্যন্ত নিতে হবে। আমার রোগিকে সিজারের আগ পর্যন্ত এরা ৪ তালায় এমন ওয়াড়ডে রেখেছিলো, যেটার এসি নস্ট, আর এসি ওয়ারড দেখে ফ্যানও ছিলোনা। কি আজব আর বিচিত্র হাসপাতাল।
রাতে বিভিন্ন সিড়ির যেখানে ইচ্ছে সেখানে ব্লক বসিয়ে দেয়। এক তালা থেকে আরেক তালায় যেতে কয়েকবার সিড়িও পরিবরতন করতে হয় রাতে। রাতে বিভিন্ন তালায় এরা এমনকি সোফাগুলো উলটে রাখে যেনো রোগীর সজনেরা রাতে সেখানে বিশ্রাম নিতে না পারে। এত বর্বর মনুষত্তহীন যে মুসলমানের সন্তানেরা হতে পারে, আদ্-দ্বীনে না আসলে বুঝতাম না।
বিভিন্ন সিড়িতে ব্লক গুলো এরা মোটেও রোগিদের উপকারের জন্য নয় বরং তাদের নিজেদের মনগড়া স্বেচ্ছাচারিতা আর ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য করেছে। রোগির সাথে, রোগির সজনদের সাথে কি যে দুর্ব্যবহার করে আদ্-দ্বীনের কাউণ্টারের স্টাফ,নারসগুলো, ডাক্তারগুলো।
আয়াগুলোর খারাপ ব্যবহারে সীমাটা একটু কম, কারন ওদের টার্গেট হলো রোগিদের ভাংগানো। আয়াদের যে যত পারে ভাংগায়, যেভাবে পারে ভাংগায়।
কে কোন তালায় কি জন্য দাঁড়িয়ে তার থোড়াই কেয়ার করে সিকিউরিটি গার্ডগুলো, কিংবা তাদের যারা পাঠায়, অর্থাৎ আদ্-দ্বীনের আডমিনিস্ট্রেশন। সিরিয়াস পেশেন্টগুলোতে পরিপুরন ওয়ারডের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা স্বজনদের কুকুরের মত খেদানোর জন্য এরা বিভিন্ন ওয়ারডের সামনে উচ্চসরে মাইক ব্যবহার করে সেই মধ্যরাতে! যেখানে বেশিরভাগ রোগি আভভান্সড স্টেজ প্রেগনেন্সি কিংবা সিজারের পরবরতি দিন গুলোতে আছেন।
এই ডাকা ডাকি, কুকুর খেদানো, আর রোগির সজনদের হয়রানি চলে রাতভর, দিনরাত, আর যতদিন দুরভাগ্য আদ্-দ্বীন নামের এই পরিচ্ছন্ন জাহান্নামে রাখবে তাদের। কিছুক্ষন পর পর কেবিন ওয়াড়ডের সামনে এই সিকিউরিটির লোকগুলো রোগীর সজনদের মাইক দিয়ে ভড়কে দেয় আর যেদিক যখন খুশি খেদিয়ে দেয়। কথায় কথায় বলে নিচে এসি আছে সিট আছে। নিচে মাত্র কয়েকটা সিট আর কিসের এসি! সিরিয়াস রোগির পাশে কেউ নেই আর সজনরা থাকবে নিচতলায় পড়ে ? এই হাসপাতালটি মারাত্মক ভাবে আন্ডার স্টাফড, আর স্টাফ যেগুলো আছে তারা কথায় কথায় চরম বিরক্তি দেখায়, ভাব দেখায় তারা কাজে অনেক ব্যস্ত। অথচ এই রোগিরাই তো তাদের চাকরির মূল উদ্দেশ্য। বসে বসে হালাল টাকা হারাম বানায় ওরা এভাবে।
রোগির সংগে অবিরাম কস্ট করতে থাকা লোকগুলোকে আল্লাহর ঘর মসজিদেও শান্তিতে ঘুমাতে দেয়না! আল্লাহর ঘরে শুয়ে থাকলে আদ্দিনের স্টাফ গুলো মাতবাড়ি করে উঠিয়ে দেয়। কাউকে খেদানোর আগে বলে ফজরের নামাজের পর এসে শুতে। অরথাত এই মানুষগুলোকে ওরা ভোর পরযন্ত, সারারাত ঘুমাতে দেবেনা। আজকে রাতে মসজিদে আমার ভাই একটু ঘুমাচ্ছে। এর মধ্যে আদ দিনের সিকিউরটির একটা শয়তান এসে তাকে বের করে দিয়েছে দেখে পুনরায় তাকে নিয়ে মসজিদের ঢুকে বলেছি আপনি ঘুমান।
পাশে বসে থেকে অপেক্ষা করতে ছিলাম দেখি বর্বরের দল আসে নাকি আবার। কিছুক্ষন পর আবার আসছে সেই সিকিউরিটির লোক। ওকে বললাম আল্লাহর ঘরে আপনারা মানুষকে বের করে দিতে পারেননা। তখন এই ব্যাটা কল দিয়ে ডড় দেখায়, কল দিয়ে মুখে মুখে আমাকে শুনিয়ে বলে দুই তিনজন অফিসার নিয়ে আসতে, যেহেতু আমি ওর মুখে কথায় মসজিদ থেকে নড়ছিনা। তাই ও যখন ওর থেকে বড় আরেক সিকিউরটির ডাকাত নিয়ে আসছে তখন আমি আমার আরেক ভাইকে কল করে ধরিয়ে দিলাম ওরে। আমার এই ভাই আবার সরকারি উচ্চ পর্যায়ে আছেন। তাকে ফোন ধরিয়ে না দিলে হয়তো ডাকাত গুলোর হাতে হয়রানির শিকার হতে হতো।
আর মুখে মুখে বলে নিচে নাকি বসার জায়গা আছে এসি আছে, সব ধান্ধাবাজি মসজিদে আসছে কত মানুষ আর নিচে ৪-৫ টা সীট। মসজিদেই থাকতে দেয়না যে মুনাফেক তারা এই অভাগাদের নিচের তলায় এসি রুমে রাখবে বিশ্যাসযোগ্য ব্যপার? আর নিচেও ভালো বাথ্রুম মোটে দুইটা। আর গর্ভকালীন সেবা ওয়ারডের সামনে যে বাথ্রুম সেটা আবার মহিলাদের, এই দুটো বাথ্রুমের আবার দরজা ভাঙ্গাচোড়া।
নিচে যাই থাক, মসজিদ থেকে মানূষ যারা খেদায় তাদের কোন কথাই বিশ্যাসযোগ্যনা। প্রশ্ন হলো আদ্-দ্বীনের মসজিদ কি আল্লাহর ঘর না? নাকি আদ্দিনের স্টাফদের বাপদাদার সম্পত্তি? এরা ধর্মের অবমাননা করছে, আল্লাহর ঘর নিজেদের অধীনে কুক্ষগত করে রেখেছে, সেজন্য ওদের ওপর অভিশাপ। অবশ্য এটা দিয়ে আরেকটা কথা মনে পড়লো। সেটা হলো বাংলাদেশের প্রতিটা মসজিদের অবস্থা।
প্রথমে মসজিদ ছিলো নামাজের জায়গা, ইবাদাতের জায়গা, আল্লাহর কাছে আশ্রয়ের জায়গা। সেখানে কিছু মানূষ প্রথমে জন সেবার নামে পাটি বসালো, ফ্যান বসালো, এসি বসালো। এবং এই পাটি, ফ্যান আর এসি রক্ষার নামে বসালো মসজিদের গেটে তালা! তাই তখন মসজিদ আল্লাহর ঘর থাকলো না, একদল ডাকাত সমাজ সেবা আর ধর্ম পালনের নামে মসজিদের মালিকানা ডাকাতি করলো। এখানে আপনি এখন আর আল্লাহর জিম্মায় না, তাই এখানে আপনাকে থাকতে দেয়া হবেনা। কিংবা এই মসজিদের মালিকদের নিয়মকানুন মানতে হবে। বাংলাদেশে মসজিদের মালিক এখন আর আল্লাহ নয়, মসজিদের মালিক এখন মসজিদ কমিটি। সব মসজিদই বাংলাদেশে মসজিদ কমিটির সম্পত্তি। মানূষের আশ্রয়ের জায়গা বাংলাদেশে অন্তত পক্ষে মসজিদ না।। মসজিদ থেকে মানূষ তাড়ানো কিংবা মসজিদের দরজায় তালা লাগানোর জন্য ওদের ওপর অভিশাপ পড়ুক। ওদের নিয়ম মসজিদে আপনি যতক্ষন থাকবেন আপনাকে নামাজ পড়তে হবে। সোজা কথায় আশ্রয়, বিশ্রাম আর মসজিদে না।
সাইদা নামের একটা ওয়ারডে বাথ্রুম দিয়ে রাখছে একটা। রোগি নিয়ে অন্য ওয়ারডের বাথ্রুমে যাওয়া লাগে। আবার পুরষ যখন সংগে থাকতে পারেনা তখন সেই হাসপাতালে রোগির সংগে হাসপাতালের নারস তো থাকবে। ওরা উন্নত বিশ্যের হাসপাতালের নিয়মের অরধেক ফলো করে। সংগে কেউ থাকতে পারবেনা কিন্তু হাসপাতাল থেকে রোগির সাথে নারস দেবেনা। রোগি বাথ্রুমে যাবে একা। পোস্ট সিজারের রোগি প্রস্রাব-পায়খায়ানার চাপ নিয়ে অন্য ওয়াড়ডে যেতে বাধ্য হয় কারন পুরো একটা ফিমেল ওয়াড়ডে বাথ্রুম দিছে একটা। আরেকদিকে কিছু ফ্লোরে পুরুষদের জন্য কোন বাথ্রুমই রাখেনি। কেবিনে যখন ছিলাম রোগিকে ক্লিন করার মাঝখানে ট্যাপের পানি গিয়ছিলো, কি আজব, ২০২৪ সালে এসে একটা হাসপাতালের কেবিনের ট্যাপের পানি এভাবে চলে যায়? সব থেকে মজার ব্যপার হলো এখানকার ডাক্তারগুলো অনেকটা মহাপুরুষ(নারী) পর্যায়ে। তারা সহজে রোগি দেখেননা তাই অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হবার তিনদিন পর দয়া করে আমার রোগিকে দেখে গেছেন তারা। এর আগ পর্যন্ত নারসের দায়িত্তে রেখে দিয়েছে।
আয়াগুলো কেবিনের রুম একবার ঝাড়ু দিয়েই বখশিস চায়। একটু হেল্প করলেই বখশিস।
আদদিনের মসজিদ সংলগ্ন বাথ্রুম যেখানে টয়লেট মাত্র দুটো, আর রোগি আর তাদের সজন হাজার হাজার।
আদ দিনে মসজিদ সংলগ্ন বাথ্রুমে টয়লেট মাত্র দুটো, অথচ রোগি আর তাদের স্বজনের সংখ্যা হাজার হাজার।
আদ দ্বীনে আমার রোগীর সীজার কমপ্লিট করতে অস্বাভাবিক রকমের সময় লাগিয়ে দিয়েছে। অপারেশনের আগের রাত ১২ টা থেকে রোগি ছিল না খাওয়া। তারপর রাত গেলো, বললো সকাল ৮ টার পর যেকোন সময় নাকি অপারেশন থিয়েটারে নেবে। তাদের এই আমবিগিউটির ফাপড়ে আমার রোগিকে সারাদিন না খাইয়ে রেখেছে, ওটি তে নিয়েও বসিয়ে রেখেছে ঘন্টার পর ঘন্টা। ওটিতে অন্যান্য রোগীদের আসা যাওয়া দেখে রোগী ভড়কে যায়।
সেই ওটিতেই আবার এদের অদক্ষ সার্জন এক রোগীকে প্রায় মেরেই ফেলেছিলো! সেটাও দেখেছে সেখানে বসে আমার রোগী। একটা নরমাল ডেলিভারীর রোগিকে এমন ভুলভাবে হ্যান্ডেল করে তারা যে রোগীর মারাত্মক ব্লিডিং হয়। রোগীর আত্মীয়, স্বামী তাদের কাছে নার্স-ডাক্তার এসে বলে যত পারেন রক্ত আনেন। কি আজব, নরমালের রোগিকে কি করলো সে এখন বালতি ভরে রক্ত লাগবে?
রোগীর ব্লিডিংই নাকি বন্ধই হচ্ছিলোনা। পরবরতিতে সেই রোগীর অবস্থার কথা শুনে ওটিতে সেই ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রাখা আমার স্ত্রী, আর যত সবাই ছিলো সবাই দুশ্চিন্তায় আর আতংকে কেরোসিন। পরে রিসিপশনে কথা বলতে গেলে বলে, সবাই নাকি সেই রোগী নিয়ে ব্যস্ত অথচ আমরা কিন্তু এই ডাক্তার নামের কলংকগুলো ঐ ভুক্তভোগী রোগির ১২ টা বাজানোর বহুত আগে থেকেই সেখানে, তারমানে আমাদের বসিয়ে রাখা কিন্তু এই ব্যস্ততা শুরুর জন্য নয় বরং আরও অনেক আগে থেকে। আর আমরা তো নরমালে করানোর জন্য যাইনি তাই পেইন উঠবে এই আশায় নিশ্চই তারা আমার রোগিকে বসিয়ে রাখবেনা! অথচ এভাবে তারা আমার রোগীকে না খাইয়ে রেখে ওটিতে বসিয়ে রেখেছে।
শুনেছিলাম বড় ডাক্তার নাকি সেই আগের রোগীর খারাপ অবস্থা শোনামাত্র চলে আসছে, সবাই নাকি সবাই আপ্রান চেস্টা করছে! অরথাত এরা অপারেশন বড় ডাক্তার দিয়ে করায়নি। পাতি ডাক্তার দিয়ে করিয়েছে, অপারেশনের নামে সামান্য নরমাল ডেলিভারির প্রসিডিওরে রোগির গুরুত্তপুরন কোন ভেইন বা আরটারি কেটে ফেলেছে! এখন তার ব্লিডিং আর বন্ধ হয়না। ওই রোগীর মা আমাদের পাশে বসে কি আহাজারি। যাই হোক আগের রাত ১২ টা থেকে পরদিন বিকাল ৪টা পর্যন্ত আমার রোগি না খাওয়া ওদের অপারেশন থিয়েটারে। আসলে ওটা থিয়েটারই বটে! আশে পাশের হাসপাতাল গুলো যদি কোন জাতের মধ্যে হতো তাহলে তো আর এই নাট্টশালায় আনতাম না। পাশে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের পরিবেশ যে কি খারাপ! আদ দ্বীন যদি হয় পরিচ্ছন্ন নরক, হলি ফ্যামিলিকে বলা যায় নোংরা নরক।
৯ এপ্রিল আগের রোগীর হাজবেন্ডকে অনেকটা সাহস করেই রোগীর অবস্থা জিজ্ঞেস করলাম, যদিও ভয় পাচ্ছিলাম মরমান্তিক কোন খবর শুনবো। কিন্ত ভালো খবর পেলাম। এই লোক তার কানেকশন ব্যবহার করে আদদিনের এই বেকুবের দলকে রোগীকে বাচানোর জন্য সরবোচ্চ প্রচেস্টা চালাতে বাধ্য করেছে।
এই লোকের মনভাব আমার মনোভাব আইডেন্টিকাল। সেও ঠিক করেছিল রোগির কিছু হলে যারা রোগীর এই অবস্থা করেছে তাদের খুজে খুজে একই পরিনতি বরন করাবে, তার যা হয় হবে। এই হাসপাতালের ঠেকায় পরে আসার আগে আমার চিন্তাও একই ছিলো। আমার রোগির ক্ষতি হলে ওদের ঈদের চাঁদ দেখার সৌভাগ্য হতোনা। ওদের দফারফা করে জেলে গেলে গেলাম। ভাগ্যের মিত্যু থাকা এক জিনিস আর ওদের মারাত্মক অবহেলার শিকার হওয়া আরেক।
রোগিকে সুস্থ করতে নিয়ে এসে রোগী তো রোগীই, তাদের সজনদেরই অসুস্থ করে ফেলে এই বর্বরদের দল। এদের একেবারে উপরের ডাক্তার, নার্স থেকে শুরু করে সামান্য আয়া আর পরিছন্ন করমি সবার ব্যবহার অত্যন্ত জঘন্য। কি নিদারুন দৃশ্য! কাউন্টারে একের পর এক রোগির সজনদের সাথে চলছে দুর্ব্যবহার! একে দেয়না ঘুমাতে, তারপর দুরব্যবহারের পর দুরব্যবহার চলতেই থাকে। আয়াগুলো তিনদিনের মাথায় বলার পর একদিন দয়া করে কেবিনের ফ্লোর একটু মোছা দেয় । বাথ্রুমে তো ঢোকেইনা।
কোন ধরনের তথ্য পাওয়া আদদিনে যে কতটা কঠিন তা শুধু ভুক্তভোগিরাই বলতে পারবেন। যারা তথ্য দেবে, স্টাফ নারস মারাত্মক শরট টেম্পার। এদের কাছে কাচুমাচু করে যায় রোগির সজনেরা, একটা কথা একবারের জায়গায় দুবার জিজ্ঞেস করলেই এরা প্রচন্ড বিরক্তি দেখায়। আর পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে তাই তারা এখান থেকে ওখানে টক্কর খেতেই থাকে। যখন এক কথা দুবার জিজ্ঞেস করলেই আপনাকে খারাপ ব্যবহার আর ঝাড়ি খেতে হবে তখন আপনি যথেস্ট পরিমান তথ্য পাবেন কিভাবে ?
কেউ সরেজমিনে তদন্ত করলেই এগুলো সব বেড়িয়ে আসবে, কারন ওদের এই অনিয়ম বহুদিন ধরে জমা হয়ে আসছে, কয়েকদিন যেকোন এক সিজারের পেশেন্টের সাথে হাসপাতালে থাকবেন, স্লিপ ডিপ্রেভেশনের শিকার হবেন, পেশেন্টের কি হলো এই নিয়ে আতংকে থাকবেন, পেশেন্টের প্রতিটা ওষুধের জন্য লাইনে দারাবেন ঘন্টার পর ঘন্টা কারন এদের স্টাফগুলো খুবই স্লো আর প্রতিটা সেক্টর আন্ডারস্টাফড, ফুল অফ ইগো ম্যানিয়াকস। অনেক সময় তো লোকই থাকেনা, কেবিনের জন্য ভোর পাচটার সিরিয়াল পাবার জন্য উদবাস্তুর মত কাউণ্যারের সামনে পরে থাকবেন আগের দিন রাত ৯ টা থেকে। আর আপনার সাথে ব্যবহার করাও হবে একই রকম ওদের ব্যবহারে নিজেকে সত্যি সত্যি উদবাস্তু মনে হবে।
এই রমজান মাসে শবে কদরের রাতে, হাসপাতালের এই নির্মম হ্রদয়হীন প্রানীগুলোকে অভিশাপ দিয়ে গেলাম। বিচার আল্লাহই করুন কারন আল্লাহর বিচারই সব চেয়ে নির্মম। আর আদ দীনের বর্তমান এই অভদ্রগুলোকে যেনো রিপ্লেস করানো হয় এবং কিছু ঈমানদার ভালো মানূষ পুনরায় বসানো হয়। যারা রোগী এবং তাদের স্বজনদের সাথে অন্তত ভালো ব্যবহার করে।
আপডেট
আদ দিনে ফলো আপের জন্য গিয়েছিলাম। ৪ তালায় বি কাউণ্টারের পাশে গাইনি ডাক্তার দেখে। ডাক্তার না বলে চামার বলাই ভালো। রোগীদের সাথে একটুও ভালো ব্যবহার করেনা। রোগিকে ভালো করে পরীক্ষা করেও দেখেনা, ব্যবহারও ভালো করেনা। টাকা দিয়ে শুধু খারাপ ব্যবহার কিনেছি। আমার রোগী ডাক্তারকে একটা কথা দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করার পর সে প্রত্যুত্তরে বলে “এক কথা দ্বিতীয়বার বলতে পারবোনা”।
একটা ব্যপার জানার ছিলো কিন্তু আমার স্ত্রী চামারটার কাছে আর দ্বিতীয়বার যেতে রাজি হলোনা। আদ দিনের ডাক্তার গুলো, বিশেষ করে গাইনি বিভাগের ডাক্তারগূলোর বেশিরভাগেরই ব্যবহার ভালোনা। হাসপাতালটিকে এরা সেচ্ছাচারীতার রাজত্ত বানিয়ে ফেলেছে। আসলে এই ডাক্তারগূলোকে রাস্তায় নামিয়ে বেদম পেটানো দরকার ছিলো।
লেখকঃ একজন ভুক্তভোগি
আপনাদের যেকোন অভিজ্ঞতার কথা আপনার নাম, ন্যাশনাল আইডী কারডের ফটোকপিসহ ইমেইল করে আমাদের কাছে পাঠান । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলে তা জানাবেন। (ন্যাশনাল আইডি কারডের ফটোকপি শুধুমাত্র ভেরিফিকেশনের জন্য)।
লেখা পাঠানোর ঠিকানা
মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ +8801703600248