ব্রাজিল প্রথমবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪ হাজারের বেশি কোভিডে মৃত্যু
করোনার আরও সংক্রামক রূপের ভাইরাস দেখা দিচ্ছে।
হাসপাতাল্গুলোতে জায়গা নেই রোগীর ভীড়ে। বিভিন্ন শহরে চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করতে করতেই মারা যাচ্ছে মানূষ। সাস্থ ব্যবস্থা ধসে পরবার সন্নিকটে।
দেশটির সর্বমোট মৃত্যুর সংখ্যা এখন প্রায় ৩৩৭,০০০ দ্বিতীয় অবস্থানে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক পরে
তবে রাষ্ট্রপতি জাইর বলসোনারো এখনোও এই প্রাদুর্ভাব রোধে লকডাউন ব্যবস্থার বিরোধিতা করে চলেছেন।
তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে লক ডাউনে অর্থনীতির ক্ষতি ভাইরাসটির প্রভাবের চেয়েও খারাপ হবে এবং তিনি স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আদালতগুলিতে আরোপিত কিছু বিধিনিষেধকে সরিয়ে দেবার চেষ্টা করেছেন।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি আবাসনের বাইরে সমর্থকদের সাথে কথা বলার সময় তিনি কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থার সমালোচনা করেছিলেন এবং প্রমাণ ছাড়াই বলেন যে এটি স্থূলত্ব ও হতাশার সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি আগের ২৪ ঘন্টা রেকর্ড করা ৪১৯৫ জনের মৃত্যুর বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সূত্রে জানা গেছে, আজ অবধি ব্রাজিলে করোনভাইরাসের ১৩ মিলিয়নেরও বেশি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। মার্চ মাসে কোভিড -১৯ এর কারনে প্রায় ৬৬,৫৭০ জন মারা গিয়েছিল, যা আগের মাসিক রেকর্ডের দ্বিগুণেরও বেশি ছিল।
“ব্রাজিল এখন … মহামারীটি নিয়ন্ত্রণের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংক্রমন রোধে পুরো প্রচেষ্টার জন্য হুমকি,” দেশটিতে করোনা সংক্রমন ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে আসা ডাঃ মিগুয়েল নিকোলিস বিবিসিকে জানিয়েছেন।
“আমার শিফটের সময় যখন চলে এসেছে, কাপড় সবেমাত্র পরিবর্তন করেছি, এরই মধ্য ফোন আসলো এই খবর নিয়ে যে অক্সিজেন সরবরাহকারী সরঞ্জামগুলি তে সমস্যা হয়েছে। অক্সিজেন সরবরাহ ছিল কিন্তু এটি রোগীদের কাছে পৌছাচ্ছিলোনা এবং তাই তারা অন্যদের কাছ থেকে অক্সিজেন নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।”
“আমি আমার অ্যাম্বুলেন্সে থাকা দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে দিলাম। এবং তারপরে আমি আমার সদর দফতরের সাথে যোগাযোগ করে দেখেছিলাম যে সেখানে আরও যেসব অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে যারা তাদের সিলিন্ডার দিতে পারবে কিনা। তবে এটিও যথেস্ট ছিল না। তাই আমরা অন্য একটি হাসপাতাল থেকে আনার চেস্টা করছিলাম। আমাদের আরও 8 টি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ফিরলাম এবং সেগুলি ইনস্টল করার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে গেলো।”
“এরপরে আমরা কয়েকজন রোগীকে স্থানান্তর করতে পেরেছিলাম তবে দুর্ভাগ্যক্রমে সেখানে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আমরা হারিয়েছি অনেকগুলো প্রাণ, কতজন আমি তা বলতে পারবো না” বলেন লুইস এডুয়ার্ডো পাইমেন্তেল, সাও পাওলো শহরের জরুরী অ্যাম্বুলেন্স পরিসেবার প্যারামেডিক।
“একটি অবস্থাও হয়েছে যেখানে আমাদেরকে দু’জনের মধ্যে একজনকে চিকিৎসা দেবার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল।”
“আমাদের কোনও রেসপাইরেটর ছিল না (কম বয়সী রোগীদের জন্য) । তাই চিকিসকদের বয়স্কদের একজনের কাছ থেকে নিয়ে অল্প বয়সীকেই দিতে হলো। এটি ছিল ডাক্তারের জন্য কঠোর পরীক্ষা। তবে আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটতে থাকবে।”
“আমরা জানতাম যে এর ফলে এক রোগীর মৃত্যু হতে পারে। একজন রোগীর কাছ থেকে রেসপাইরেটর সরিয়ে নেয়ার অর্থ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তার উপর থেকে হাল ছেড়ে দিয়েছে, এবং মূলত কেবল তার চলে যাবার আগ পর্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলার প্রচেস্টা ছাড়া আর কিছুই করার ছিলনা। আমার শিফট চলাকালীন তিনি বেঁচে ছিলেন, তবে আমি জানি না এরপরে কি ঘটেছিল। ”
- বলেন একটি জরুরি কেয়ার নার্স, তিনি নাম না প্রকাশের জন্য অনুরোধ করেছিলেন কারণ মিডিয়ায় কথা বলার অনুমতি ছিল না তার।