১৯৩৭ সালের ১৩ই ডিসেম্বর। দিনটি এখনও ইতিহাসের পাতায়সজীব। সাক্ষী করে রেখেছিলো চীনের তৎকালীন রাজধানী নানচিংকে, সেখানে থাকা প্রত্যেকটি মানুষের নিঃশ্বাসকে! ঠিক এই দিনেই শুরু হয় গণহত্যা। শুরু হয় লাশের পর লাশ স্তূপ করে রাখার প্রস্তুতি। জাপানের রাজকীয় সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রোপণ করা কালো অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ হয় এই নানচিং, এক সময়ের উন্নত চীনা শহর। চল্লিশ হাজার থেকে তিন লক্ষ চীনা জনগণকে হত্যা করা হয়।
নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি চলে ধর্ষণ। হাজার হাজার চীনা নারী ধর্ষিত হয়। বাদ যায় নি বারো বছরের কিশোরীও। ধর্ষণ করার পর, জাপানি সৈন্যরা বেয়োনেট দিয়ে গুতিয়ে দেখত। কোন কোন সৈন্যরা গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভ থেকে বাচ্চা বের করে দুই তিন ভাগ করত। উপরে ছুড়ে মারা হতো, মাঝে মাঝে সিদ্ধ করা হতো ফুটন্ত গরম পানিতে।
প্রতিযোগিতা চলতো ধর্ষণের। গণধর্ষণও বাদ যেতো না। এমনকি বাবাকে বাধ্য করা হতো তার নিজের মেয়েকে ধর্ষণ করবার জন্য, সন্তানকে তার মাকে। এটি ছিল ১৯ শতকের নরক।
জীবন্ত চীনা নাগরিকদের মাটিতে পুঁতে রাখা হতো। জার্মান শেপার্ড দিয়ে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করা হতো শরীরের অঙ্গ। বরফে হাঠতে বাধ্য করা হতো। হত্যা করতে করতে বিরক্তির চরম পর্যায় থেকে হয়তো নতুন উপায়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর পথ আবিষ্কারে মগ্ন ছিল সেই রক্তপিপাসু জাপানি সৈন্যরা।
৬ সপ্তাহ যাবত চলছিলো এই হত্যার খেলা। পৈশাচিক আনন্দে মত্ত জাপানি সৈন্যদের খেলার পাত্রে পরিনিত হয়েছিল নানচিংবাসীরা। মারা গিয়েছিলো প্রায় ৩০০,০০০। তবে যারা টিকতে পেরেছিল, তাদের জীবনসঙ্গী হয়েছিলো ট্রমা।
ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে, এই পাপাচার, হত্যাযজ্ঞের যথার্থ কোন উদ্দেশ্য ছিলো না। আর ইতিহাস কৌতূহল জাগায় যে মানুষ কতটা ভয়ংকর হতে পারে!