বিড়ালের আঁচড় পেলে সবচেয়ে বড় ভয় হচ্ছে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হওয়ার। জলাতঙ্ক একটি মারাত্মক ভাইরাসজনিত রোগ যা প্রাণঘাতী হতে পারে। তাই, বিড়ালের আঁচড় পেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
জলাতঙ্কের লক্ষণ:
জলাতঙ্কের লক্ষণ সাধারণত আঁচড়ের জায়গা থেকে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- আঁচড়ের জায়গায় ব্যথা, লালচে ভাব, সুঁচালো বোধ
- জ্বর
- মাথা ব্যথা
- অস্বস্তি
- ক্লান্তি
- ক্ষুধামন্দা
রোগের উন্নত পর্যায়ে লক্ষণগুলো আরও তীব্র হয়ে উঠতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:
-
- পানি দেখলে ভয় পাওয়া
- গলা ব্যথা
- গিলে ফেলতে সমস্যা
- উন্মাদনা
- পেশির খিঁচুনি
- লালা ঝরা
- অচেতন হয়ে যাওয়া
বিড়ালের আঁচড় পেলে কী করবেন:
- ক্ষত পরিষ্কার করুন: সাবান দিয়ে প্রচুর পানি দিয়ে ক্ষতটি ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
- চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তিনি আপনার ক্ষতের অবস্থা পরীক্ষা করে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন।
- বিড়ালটির পর্যবেক্ষণ করুন: যদি সম্ভব হয়, বিড়ালটির পর্যবেক্ষণ করুন। যদি বিড়ালটি অসুস্থ হয়ে পড়ে বা মারা যায়, তাহলে চিকিৎসককে জানান।
জলাতঙ্কের টিকা:
জলাতঙ্কের টিকা দুই ধরনের হয়:
-
- প্রি-এক্সপোজার প্রোফাইলেক্সিস: এটি আঁচড়ের আগে দেওয়া হয়। সাধারণত পশুচিকিৎসকরা তাদের পোষা প্রাণীকে এই টিকা দেন।
- পোস্ট-এক্সপোজার প্রোফাইলেক্সিস: এটি আঁচড়ের পর দেওয়া হয়। আঁচড়ের তীব্রতা অনুযায়ী টিকার ডোজ এবং সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়।
জলাতঙ্ক প্রতিরোধ:
- পোষা প্রাণীকে নিয়মিত টিকা দিন: আপনার পোষা প্রাণীকে নিয়মিত জলাতঙ্কের টিকা দিন।
- বাড়ির আশেপাশে ঘুরাঘুরি করার সময় সতর্ক থাকুন: পথে ঘাটে অচেনা প্রাণীর কাছে যাবেন না।
- যদি কোনো প্রাণী আপনাকে কামড় দেয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন: হাত সবসময় পরিষ্কার রাখুন এবং খাবার খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে নিন।
মনে রাখবেন: জলাতঙ্ক একটি মারাত্মক রোগ। তাই, কোনো ধরনের ঝুঁকি নিয়ে চলবেন না। বিড়ালের আঁচড় পেলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।